ঢাকা , বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চার হাত এক হবে আজ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে সতর্ক করে যা বললেন এরদোগান ভালোবেসে এক সন্তানের জননীর কাছে চীনের চেং নাং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন রাজনৈতিক, বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে না: উপদেষ্টা ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ৬৯ কারাগারের ১৭টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক এরদোয়ানের সমালোচনায় ৯ জনের কারাদণ্ড ভারত সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন অব্যাহত রাখলে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার দাবি করবে বাংলাদেশ: রিজভী জার্মান কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বায়ার্নের বিদায় সাজেকে গোলাগুলি চলছে, ৪০০ পর্যটক আটকা পাকিস্তানের কাছ থেকে চিনি কিনল বাংলাদেশ নামিবিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হলেন নান্দি নাদাইতওয়া নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে বিপাকে ট্রাম্প স্বর্ণমন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা "আমরা কেন গুলি চালাব? আমরা তো জনগণের বন্ধু"- ডিএমপি কমিশনার নাগরিকদের নিরাপত্তায় সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানাল যুক্তরাষ্ট্র সরকারি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ পাকিস্তানের কাছ থেকে ২৫ হাজার টন চিনি কিনল বাংলাদেশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মন্তব্য সেঞ্চুরি মিস করা জাকেরকে মন খারাপ করতে নিষেধ মুশফিকের

‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করতে হবে পুলিশ-বিচারক সবাইকে’

  • আপলোড সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০৩:১৫:০৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০৩:১৫:০৬ অপরাহ্ন
‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করতে হবে পুলিশ-বিচারক সবাইকে’
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ-বিচারক সবাইকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মোহাম্মদ আল মামুন। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আল মামুন বলেন, ‘আমরা সহিংসতার শিকার নারীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেই। বিনামূল্যে অর্থাৎ সরকার এই খরচ দেয়। আমাদের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বছরই আইনি সহায়তা প্রত্যাশী নারীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এখনও অনেক নারী সহিংসতার শিকার হলেও মামলা করছেন না। নারীদের বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে পুলিশ ও বিচারক সবাইকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিকার ও প্রতিরোধ করা যাবে।’

অনুষ্ঠানে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমজেএফ’র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রুমা সুলতানা। সম্প্রতি এমজেএফ পরিচালিত একটি গবেষণার বরাতে তিনি জানান, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০১০ অনুযায়ী নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়। এই আইনের অধীনে যথেষ্ট শাস্তির বিধান না থাকায় আইনজীবীরা এ সংক্রান্ত মামলা নিতে খুব একটা আগ্রহ দেখান না। ফলে সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা এই আইনের সুফল পাচ্ছেন না।ধর্ষণের ঘটনায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে এমন কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরেন উই ক্যান নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক জিনাত আরা হক। আইনি, আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিকসহ নানান জটিলতায় কীভাবে নারীরা বিচার থেকে বঞ্চিত হন সেসব উদাহরণ তার আলোচনায় উঠে আসে।

দাতা সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে ইউএন উইমেনের রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং বলেন, ‘আমরা করোনা মহামারি পার করে এলেও, নারীর জীবনে এই মহামারির যে নেতিবাচক প্রভাব তা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। কারণ বৈশ্বিকভাবে এই বিষয়কে যতটা গুরুত্ব দেয়ার কথা ছিল তা দেয়া হয়নি। একটা খুবই ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে, বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী তার সঙ্গীর হাতে খুন হচ্ছেন। বাংলাদেশে নারী নির্যাতন সংক্রান্ত অনেক আইন ও নীতিমালা আছে কিন্তু সেগুলো সেভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কারণ আইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যে দায়বদ্ধতা ও ব্যক্তির আর্থিক সক্ষমতা দরকার তা নেই। আশার কথা হলো, আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে কিন্তু অগ্রগতি ধারা খুবই ধীরগতির।’নাগরিকতা-সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের ডেপুটি টিম লিডার ক্যাথারিনা কোনিগ মনে করেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সম্মিলিতি প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

কানাডিয়ান হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি স্টেফানি সেইন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড বলেন, ‘বাংলাদেশে আমাদের নতুন হাইকমিশনার মনে করেন, শুধু পেশাগত জায়গা থেকে নয় বরং ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকে জেন্ডার সমতা নিয়ে কাজ করতে হবে। জেন্ডার সমতা নিয়ে কাজ করার সময় শুধু নারী-পুরুষ নিয়ে ভাবলে হবে না। এর বাইরেও যারা আছেন, তাদের কথাও মাথায় রাখতে হবে। তৃণমূল থেকে নীতিনির্ধারক পর্যায় পর্যন্ত কাজ করলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’উন্মুক্ত আলোচনায় নিজেদের জীবনের নানান অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ট্রান্সনারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী এবং বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার তরুণ নারীরা।

অনুষ্ঠানে সভাপ্রধানের বক্তব্যে এমজেএফ-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষা, খেলাধুলা, চাকরিসহ অনেক ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন বেড়েছে। কিন্তু ধর্ম, সংস্কৃতি, প্রচলিত প্রথাসহ নানা কারণে আমাদের এই ক্ষমতায়ন, অগ্রগতি একটি জায়গায় এসে থমকে গেছে। আমরা অনেক ভালো আইন করেছি কিন্তু এগুলোর বাস্তবায়নে বড় ব্যর্থতা রয়ে গেছে। তৃণমূল পর্যায়ে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার জবাবদিহিতার অভাবে এই উপমহাদেশে বাল্যবিয়েতে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যত বাড়ছে ভৌগোলিকভাবে বিরূপ অবস্থানে থাকা এলাকার নারীদের প্রতি সহিংসতাও তত বাড়ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত পরিকল্পনার সময় এই নারীদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে নারীবান্ধব সমাজ গড়ার। বিচারব্যবস্থা সহজ করতে হবে। যতদিন নারী-পুরুষের সমতা না আসে, ঘরে-বাইরে নারীকে সম্মান না করা হয়, তার অবদানের স্বীকৃতি না দেয়া হয়, ততদিন নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে না।’

কমেন্ট বক্স